
বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব অনেক মজবুত এবং ভবিষ্যতে তা আরও মজবুত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার শ্রী মনোজ কুমার। রবিবার(৩০ জুন) দুপুরে নীলফামারীর চিলাহাটিতে রেল স্টেশন ও মুক্তিরহাট জিরো পয়েন্ট এলাকা (ভারতের হলদিবাড়ি) পর্যন্ত রেলপথ পরিদর্শণ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দুই দেশের জনগন চাইলে খুব শীঘ্রই চিলাহাটি-হলদিবাড়ি স্থলবন্দর ও চেকপোষ্ট চালু করা হবে। পাশাপাশি তিনি একটি সু-খবর দিয়ে জানান, এবার বিভাগীয় শহর রংপুরে নতুন ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন অফিস অচিরেই চালু করা হবে।
তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার রংপুর বিভাগের মানুষের সুবিধার্থে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় নগরী রংপুরে নতুন সহকারী হাই কমিশন অফিস খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে এ অঞ্চলের মানুষজনকে ভারতের ভিসার জন্য রাজশাহী বা ঢাকা যেতে হবেনা। রংপুর বিভাগীয় শহরেই ভিসা সুবিধা পেয়ে যাবে দ্রুত। তিনি আরো বলেন, রেল সংযোগ স্থাপনার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সড়ক (স্থলপথ) সংযোগের কাজও দ্রুত শুরু করা হবে।
চিলাহাটি
পরিদর্শনে রাজশাহীস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার মনোজ কুমারকে
ফুল দিয়ে বরন করে নেন ডোমার উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার ফারহানা আক্তার সুমী,
নীলফামারী চেম্বার সভাপতি মিজানুর রহমান।
ডোমার উপজেলা চেয়ারম্যান
সরকার ফারহানা আক্তার সুমী বলেন, কথা বলে যতদুর জানতে পারলাম চিলাহাটি
রেলষ্টেশন থেকে উত্তরাঞ্চলের মানুষজন একই ট্রেনে শিলিগুড়ি ও কলকাতা পর্যন্ত
যাতায়াত করতে পারবেন। এ জন্য চিলাহাটিতে চেকপোস্ট ও ইমিগেশনের ব্যবস্থা
দ্রুত চালু করবেন ভারত ও বাংলাদেশ সরকার। তিনি আরো বলেন, চিলাহাটি স্থল
বন্দর চালু হলে চিকিৎসা সেবাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে সুফল আসবে। এই এলাকার
মানুষের দাবি দুই দেশের রেলপথের পাশাপাশি সড়ক পথ স্থাপনের ।
নীলফামারী চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ট্রেনরুটটি ব্যবসা বানিজ্যে আমদানী রপ্তানী জন্য গুরুত্বপূর্ন। এটি চালু অত্যান্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। এর জন্য চিলাহাটিতে ইমেগেশন চালু করা জরুরী। ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার শ্রী মনোজ কুমার চিলাহাটি পরিদর্শনে মনে হলো ট্রানজিট (করিডোর) চালুর পর ভারতের ট্রেন গেদে হতে বাংলাদেশের দশর্না দিয়ে প্রবেশ করে নীলফামারীর চিলাহাটি দিয়ে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারত প্রবেশ করবে। পরীক্ষামূলকভাবে চলতি জুলাই মাসের যে কোন দিন বাংলাদেশ দিয়ে ভারতের রেল চলতে পারে। এটাকে নীলফামারী চেম্বার সাধুবাদ জানায়।
সুত্র মতে, এই ঐতিহাসিক রুটে দার্জিলিং মেল চলত দেশভাগের আগের দিনগুলিতে। দেশভাগের পরও কয়েক বছর এই পথে চলাচল করে দার্জিলিং মেল ১৯৬২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। দীর্ঘদিন পর নীলফামারী-চিলাহাটি ও ভারতের-হলদিবাড়ি-জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ির রেলপথ পুনরায় সংযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর হতে পন্যবাহী ও ২০২২ সালের পহেলা জুন থেকে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস নিউজলপাইগুড়ি-ঢাকা নিয়মিত চলাচল করছে।
জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গেদে থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার কমাতে চায় ভারত। ভারতকে এই রেল ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকার। ট্রানজিট শুল্ক থেকে রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের সাথে রেল যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে বাংলাদেশ।