নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র, পায়ে হেঁটেই নদী পাড়ি!

নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র, পায়ে হেঁটেই নদী পাড়ি!


ফুলছড়ি সংবাদদাতাঃ ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদীর বিভিন্ন স্থানে পলি জমে ডুবোচর ও ছোট-বড় চর জেগে ওঠায় নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, ফলে স্থানীয়দের মাইলের পর মাইল পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হচ্ছে। পানি না থাকায় ধু-ধু বালু চর এখন মরুভূমির আকার নিয়েছে। এক সময়ের উত্তাল নদী এখন বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ই শুকিয়ে থাকে।

ফুলছড়ির ব্রহ্মপুত্র নদে  চরাঞ্চলের হাজারো মানুষসহ নদীপথে যাতায়াতকারীদের পায়ে হেঁটে বা ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বালুচর পাড়ি দিতে হচ্ছে। নদীর এমন অবস্থা যোগাযোগ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

ব্রহ্মপুত্র নদের চরের উৎপাদিত কৃষিপণ্য জেলার চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নদীপথে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষিপণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।

অন্যদিকে, চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন ৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে নদের বালু চর পাড়ি দিতে হয়। রোগী ও শিশুদের নিয়ে এই দুর্ভোগ আরও তীব্র।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় সারা বছর পানি থাকা ব্রহ্মপুত্র নদ এখন প্রায় অর্ধেক সময় শুকিয়ে থাকে। নাব্যতা সংকটের কারণে নৌপথে যাতায়াতকারী যাত্রী ও নৌকার মাঝিরা চরম ভোগান্তির শিকার। নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর জেগে ওঠায় নৌকা চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, ফলে অতিরিক্ত সময় ও খরচ ব্যয় করতে হচ্ছে। 

ফুলছড়ি চরের বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, ‘বছরের অর্ধেক সময় নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হেঁটে যাওয়া আসা করতে হয়। মাঝেমধ্যে নৌকাও আটকা পড়ে গভীর নদীর বালুচরে।’

গাবগাছি চরের রাজন শেখ বলেন, নাব্যতা সংকট নিরসনে দ্রুত ও সঠিকভাবে খনন কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন, যাতে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সহজ হয় এবং নৌপথে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক থাকে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক মুঠোফোনে জানান, নদীর ভাঙন, উজানের পানি প্রবাহ কমে যাওয়া এবং বর্ষার পলিমাটি জমে যাওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসুমে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য ব্রহ্মপুত্র নদের ১৬৫টি চর রয়েছে। এসব চরের মানুষ ছাড়াও বালাশী-বাহাদুরাবাদঘাট দিয়ে কমপক্ষে ১০ জেলার মানুষ যাতায়াত করেন। তবে নদীর বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জীবনযাত্রা কঠিন করে তুলেছে।

 (ছবি সংযুক্ত) 

নবীনতর পূর্বতন