নেউন সাংবাদিকদের অপতৎপরতায় অতিষ্ঠ সাঘাটা-ফুলছড়ির প্রতিষ্ঠান প্রধানরা

নেউন সাংবাদিকদের অপতৎপরতায় অতিষ্ঠ সাঘাটা-ফুলছড়ির প্রতিষ্ঠান প্রধানরা


গাইবান্ধা (সাঘাটা-ফুলছড়ি): গাইবান্ধার সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় কিছু স্বীকৃতিহীন ও নামসর্বস্ব গণমাধ্যমের পরিচয়ে এক শ্রেণির কথিত নেউন সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করছেন, যা মূলধারার সাংবাদিকতা ও জনস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপের শামিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব তথাকথিত সাংবাদিকদের অধিকাংশেরই নেই কোনো স্বীকৃত গণমাধ্যমের অনুমোদন বা নৈতিক পেশাদারিত্ব। তারা মোটরসাইকেলে ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্কুল-মাদ্রাসা, সরকারি-বেসরকারি দফতর ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করে হয়রানি চালাচ্ছে। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে, না দিলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বলেন, “প্রায়ই কিছু ব্যক্তি নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিদ্যালয়ে আসে এবং নানা অজুহাতে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মিথ্যা রিপোর্ট করার হুমকি দেয়, অথচ তাদের পত্রিকা কোথায় প্রকাশিত হয়, সেটাই কেউ জানে না।”

সাঘাটার স্থানীয়  সাংবাদিক আনিসুর রহমান টিপু বলেন, “কিছু অননুমোদিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের কার্ড সংগ্রহ করে এক শ্রেণির লোক নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, তারা সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ না করে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছেন। এতে আমাদের মতো মূলধারার সাংবাদিকদের পেশাগত মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”

ফুলছড়ির স্থানীয় সাংবাদিক সাকিল আহমেদ বলেন, “এ ধরনের অপসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সত্যিকারের সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। সাধারণ মানুষ প্রকৃত তথ্য পাওয়ার সুযোগ হারাবে।”

আরেক স্থানীয় সাংবাদিক ইয়ামিন হাসান বলেন, “এই তথাকথিত সাংবাদিকরা মূলত ফেসবুকে কয়েক লাইন পোস্ট করেই নিজেদের সাংবাদিক দাবি করে। প্রকৃত সাংবাদিকতার চর্চা না করে, তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘুরে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত।”

সরেজমিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত চাপের মুখে রয়েছে। ভয়ের কারণে অনেকে তাদের দাবি মেটাতে বাধ্য হন।

সচেতন মহল মনে করছে, প্রকৃত সাংবাদিকতা রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত অনুমোদনহীন ও অপসাংবাদিকদের তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে সাংবাদিকতার গৌরব ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকে।
নবীনতর পূর্বতন